শীতকালীন সবজির মধ্যে কুমড়া অন্যতম। সবজি হিসেবে সুস্বাদু হওয়ার পাশাপাশি কুমড়ার রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা। কুমড়া ভিটামিন সি, বি এবং ডি এর পাশাপাশি ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ফোলেট, আয়রন এবং পটাসিয়াম সমৃদ্ধ। যা বিভিন্ন রোগ থেকে শরীরকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পেটের অসুখ কমায়। অনিয়ন্ত্রিত খাওয়া-দাওয়ার কারণে বদহজম ও গ্যাসের সমস্যা হয়। এমন পরিস্থিতিতে পেট মজবুত করতে কুমড়ার বিকল্প নেই। কারণ এই সবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি ও ফাইবার, যা শুধু হজমশক্তিই বাড়ায় না, কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগের প্রকোপ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
পানিশূন্যতার ঝুঁকি কমায়। শরীরকে সবল রাখতে পানির কোনো বিকল্প নেই। কারণ দীর্ঘদিন শরীরে প্রয়োজনীয় পানি না পেলে নানা রোগ দেখা দেয়। তাই শরীরে যেন পানির ঘাটতি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কুমড়ায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জল, যা শরীরের অন্দরে জলের অভাব পূরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে এবং ডিহাইড্রেশনের মতো সমস্যায় ভোগার আশঙ্কাও কমায়।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের খাদ্যতালিকায় কুমড়া জাতীয় খাবার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। কারণ এতে এমন কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকলে হার্টের স্বাস্থ্যও ভালো থাকে। আর হৃৎপিণ্ড শক্তিশালী হলে সামগ্রিক আয়ু বাড়ে, আর কী বলা যায়।
ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়। কুমড়ার কিছু উপাদান শরীরে প্রবেশ করে ত্বককে ভেতর থেকে সুস্থ করে তোলে। ফলে সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে আসে।
শরীর ঠান্ডা করে। অনেক সময় শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা বেশ খানিকটা বেড়ে যায়, যা মোটেও ভালো নয়। তাই সপ্তাহে ২-৩ দিন নিয়মিত কুমড়ার রস ব্যবহার করা উচিত। যেহেতু কুমড়াতে প্রচুর পরিমাণে জল রয়েছে, তাই এতে প্রচুর খনিজ উপাদান রয়েছে যা শরীরকে শীতল করে এবং শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিনগুলিকেও বের করে দেয়। ফলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। প্রতিদিন লেবুর রসের সাথে কুমড়ার রস মিশিয়ে খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। ফলে সংক্রমণ ছাড়াও বিভিন্ন ছোট-বড় রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
কুমড়াতে এক ধরনের নিউরোট্রান্সমিটার থাকে যাকে বলা হয় কোলন। যা শরীরে চাপের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। বিভিন্ন মানসিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যায়।
গবেষণায় দেখা গেছে যে কুমড়ার রস ওজন কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত খেলে শরীরে ফাইবারের মাত্রা বাড়ে। ফলে সে বেশিক্ষণ ক্ষুধার্ত থাকে না।
দীর্ঘদিন ধরে পেটের রোগ বা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকেও মুক্তি পেতে সাহায্য করে কুমড়া।
অনেকেই কম পানি পান করেন, বিশেষ করে শীতকালে। ফলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। কুমড়োর রস বা তরকারি শরীরকে বেশিক্ষণ হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে।
কুমড়োর রস রক্তচাপের রোগীদের জন্য সর্বোত্তম প্রতিকার।
রাতে ভালো ঘুম হয় না। মানসিক চাপ ও টেনশন অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কুমড়ার রস বা তরকারি আপনাকে ভালো ঘুমাতে সাহায্য করবে।
নিয়মিত কুমড়োর রস ব্যবহার করলে ত্বকের নিস্তেজ, রুক্ষতা কমে যাবে। কয়েকদিনেই ত্বক চকচকে ও উজ্জ্বল দেখাবে। এমনকি ব্রণ ও ব্রণের সমস্যাও দূর করবে।
0 Comments